Writer - Tanha Tabassum Tamannah
আমার সাথে সারাজীবনে ভৌতিক কিচ্ছু ঘটে নি। শুধুমাত্র আমার মায়ের আশেপাশে থাকলে আমি বা পাপা বুঝি কিছু একটা সমস্যা হচ্ছে। ঘটনাটা মা কে নিয়েই।
আমার মা অসম্ভব সুন্দরী একজন মহিলা। হ্যা সবার কাছেই নিশ্চই সবার মা সুন্দর,কিন্তু শর্তহীন ভাবে মেনে নেওয়া টাইপ সুন্দরী বলতে যা বোঝায় মা সেটাই। মা প্রফেসর। অসম্ভব যুক্তিসম্পন্ন শিক্ষিতা এবং আধুনিক ধার্মিক । ভৌতিক ব্যপারগুলো তার পার্সোনালিটির সাথে আসলেই যায় না।
যাই হোক কাহিনীতে আসি।
মা কারমাইকেল কলেজে অনার্স পরার সময় এই ঘটনাটা ঘটে। আমার নানুরা তখন হসপিটাল কোয়াটারে থাকত। একদিন মা জোহরের নামাজ পড়ার সময় দেখে বাইরের বাগানে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। মা ভাবলো নামাজ শেষ করে ছেলেটাকে ডেকে বলবে চলে যেতে। সালাম ফেরানোর সময় মা দেখলো ছেলেটা বারান্দার গ্রীল ধরে দাঁড়িয়ে আছে মার দিকে তাকিয়ে। মা নামাজ শেষ করার পরে আর ছেলেটাকে দেখেনি।
সেদিন রাতে মার শোয়ার পরে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায়, দেখে অই ছেলেটা মার মুখের দিকে ঝুঁকে আছে। মা ভয়ে চিৎকার পর্যন্ত করতে পারে নি। পরদিন নানুকে বলার পর নানু মা কে ইচ্ছামত ঝাড়ে। কারণ নানু ডাক্তার তার উপরে অসম্ভব ধার্মিক। নানুর কথা ছিলো "তুমি কি সূরা জানো না?"
সেদিন রাতে আবার ছেলেটা আসে। এইবার মার সাথে রীতিমতো ধস্তাধস্তি হয়, মা সূরা পরতে থাকে, ছেলেটা মা কে বলে "তোর চে বেশী সূরা আমি জানি" এক পর্যায়ে মা বিছানা থেকে পরে যায়। শব্দ শুনে নানু দৌড়ে আসে।
এরপরে মা কে আর একা ঘুমাতে দেওয়া হয় নি।
মার উপরে অত্যাচার কমলেও একেবারে শেষ হয় নি। ছেলেটা দুইটা ছোটোছোটো মেয়ে নিয়ে প্রায়ই আসে। দূরে দূরে থাকে। মা কোনো কারণে রাতে একা ঘুমালেই শুরু করে অত্যাচার। বুকে চেপে বসা,শ্বাস নিতে না দেওয়া অমানসিক অত্যাচার।
এইটুকু হচ্ছে শোনা কাহিনী মার কাছে।
আমি আর পাপা কি কি ফেস করি সেইটা এইবার বলি,
মা কখনও নামাজ কোরআন কাযা করে না। অবস্থা এমন যে কোরআন শরীফ তিলাওয়াত এর শব্দ কখন চলে আর কখন বন্ধ থাকে বোঝাই যায় না। মাকে তাবিজ দিলে সে সেই তাবিজ হারায় যায়। খুঁজে পাওয়া যায় অদ্ভুত সব জায়গায়,বুক সেলফের পিছনে,রান্না ঘরে,বেসিনের কেবিনেটে, একবার আমার একটা টেডির তুলার সাথেও পাওয়া গেল ...
পাপা সাথে ঘুমালেই মা শুধু ভাল মত ঘুমাতে পারে,না হয় একটু পর পর ই " আর কত বিরক্ত করবা তোমরা?যাও তো " টাইপ কথা বলে চিৎকার করে।
মা হালকা পাতলা মানুষ। ঘুমের মধ্যে তার সবচে পছন্দের কাজ হচ্ছে আমার আর পাপার গলার উপরে হাত রাখা। এই হাতের ওজন কোনো মানুষের হাতের ওজন হতে পারে না। আমার নিজের সাথেও এমন অনেক বার হইসে যে শ্বাস নিতে না পেরে ঘুম ভেঙে গেসে। গলা থেকে মার হাত সরানোটাও খুবই কঠিন হয়,এত ভারী হাত।নরমালি ঘুমের মধ্যে মানুষ শক্তি খাটায় না। কিন্তু মার হাত সরাতে ঘাম ছুটে যায়। মার ঘুম ভেঙে গেলেই আবার হাত নরমাল লাগে।
পাপাও এমনটা ফেস করে অনেক।
মা এখন জিনিসগুলোর সাথে ইউজড টু। সে খুব স্বাভাবিক ভাবেই বলে "পিচ্চি দুইটারে যে কেন সব সময় ন্যাড়া করে রাখে বদ জীনটা"
-----
আমার কোনো ভাই বোন নাই। মা কনসিভ করার পরপরই মিসকারেজ হয়ে যেতো। আমি পেটে আসি রমজান মাসে।আমি পেটে আসার পর থেকে একটা ওয়াক্ত বাকি ছিল না যখন আমাদের বাসায় কেউ কোরআন পড়ে নি। তবুও আমার জন্ম হওয়াটা সোজা ছিল না। যাই হোক। আমি যখন ক্লাস থ্রি তে পড়ি সবাই বলতে শুরু করল "তুমি ভাই নিবা না বোন? তোমার মার একটা বাবু হবে এইবার! " আমি মোটেও খুশি ছিলাম না। একদিন খুব বৃষ্টি হচ্ছিলো। আমি স্কুলে যাই নি। মার বিছানায় বসে পাপার সাথে খেলছি । মা মাত্র গোসল করে আসছে, ক্লাস নিতে যাবে। মা ড্রেসিন টেবিলের টুলটা টেনে আয়নার সামনে বসতে গেলো,(আমি তখন হা করে মার দিকে তাকায় আছি। এত সুন্দর! ) হঠাৎ আমার চোখের সামনে টুলটা আস্তে করে সরে গেলো আর মা মেঝেতে পরে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলো। রক্ত দেখে আমি সেন্সলেস হয়ে গেলাম। যখন জ্ঞান ফিরল তখন মা হস্পিটালে। আমি এখনও চোখের সামনে স্পষ্ট দেখি কিভাবে ড্রেসিন টেবিলের টুলটা সেদিন সরে গেছিলো একা একা। এখনও আমার অদ্ভুত লাগে অই দৃশ্যটা।
--
আমি অনেক সাহসী। ভয় তেমন পাই না। শুধু একলা থাকলে ঘুমাতে পারি না রাতে। ভোর হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। কেন ভয় পাই জানি না। শুধু জানি অন্ধকারে একা ঘরে চোখ বন্ধ করলে কিছু একটা হয়। কেউ আমাকে ঘুমাতে দেয় না।
আমার সাথে সারাজীবনে ভৌতিক কিচ্ছু ঘটে নি। শুধুমাত্র আমার মায়ের আশেপাশে থাকলে আমি বা পাপা বুঝি কিছু একটা সমস্যা হচ্ছে। ঘটনাটা মা কে নিয়েই।
আমার মা অসম্ভব সুন্দরী একজন মহিলা। হ্যা সবার কাছেই নিশ্চই সবার মা সুন্দর,কিন্তু শর্তহীন ভাবে মেনে নেওয়া টাইপ সুন্দরী বলতে যা বোঝায় মা সেটাই। মা প্রফেসর। অসম্ভব যুক্তিসম্পন্ন শিক্ষিতা এবং আধুনিক ধার্মিক । ভৌতিক ব্যপারগুলো তার পার্সোনালিটির সাথে আসলেই যায় না।
যাই হোক কাহিনীতে আসি।
মা কারমাইকেল কলেজে অনার্স পরার সময় এই ঘটনাটা ঘটে। আমার নানুরা তখন হসপিটাল কোয়াটারে থাকত। একদিন মা জোহরের নামাজ পড়ার সময় দেখে বাইরের বাগানে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। মা ভাবলো নামাজ শেষ করে ছেলেটাকে ডেকে বলবে চলে যেতে। সালাম ফেরানোর সময় মা দেখলো ছেলেটা বারান্দার গ্রীল ধরে দাঁড়িয়ে আছে মার দিকে তাকিয়ে। মা নামাজ শেষ করার পরে আর ছেলেটাকে দেখেনি।
সেদিন রাতে মার শোয়ার পরে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায়, দেখে অই ছেলেটা মার মুখের দিকে ঝুঁকে আছে। মা ভয়ে চিৎকার পর্যন্ত করতে পারে নি। পরদিন নানুকে বলার পর নানু মা কে ইচ্ছামত ঝাড়ে। কারণ নানু ডাক্তার তার উপরে অসম্ভব ধার্মিক। নানুর কথা ছিলো "তুমি কি সূরা জানো না?"
সেদিন রাতে আবার ছেলেটা আসে। এইবার মার সাথে রীতিমতো ধস্তাধস্তি হয়, মা সূরা পরতে থাকে, ছেলেটা মা কে বলে "তোর চে বেশী সূরা আমি জানি" এক পর্যায়ে মা বিছানা থেকে পরে যায়। শব্দ শুনে নানু দৌড়ে আসে।
এরপরে মা কে আর একা ঘুমাতে দেওয়া হয় নি।
মার উপরে অত্যাচার কমলেও একেবারে শেষ হয় নি। ছেলেটা দুইটা ছোটোছোটো মেয়ে নিয়ে প্রায়ই আসে। দূরে দূরে থাকে। মা কোনো কারণে রাতে একা ঘুমালেই শুরু করে অত্যাচার। বুকে চেপে বসা,শ্বাস নিতে না দেওয়া অমানসিক অত্যাচার।
এইটুকু হচ্ছে শোনা কাহিনী মার কাছে।
আমি আর পাপা কি কি ফেস করি সেইটা এইবার বলি,
মা কখনও নামাজ কোরআন কাযা করে না। অবস্থা এমন যে কোরআন শরীফ তিলাওয়াত এর শব্দ কখন চলে আর কখন বন্ধ থাকে বোঝাই যায় না। মাকে তাবিজ দিলে সে সেই তাবিজ হারায় যায়। খুঁজে পাওয়া যায় অদ্ভুত সব জায়গায়,বুক সেলফের পিছনে,রান্না ঘরে,বেসিনের কেবিনেটে, একবার আমার একটা টেডির তুলার সাথেও পাওয়া গেল ...
পাপা সাথে ঘুমালেই মা শুধু ভাল মত ঘুমাতে পারে,না হয় একটু পর পর ই " আর কত বিরক্ত করবা তোমরা?যাও তো " টাইপ কথা বলে চিৎকার করে।
মা হালকা পাতলা মানুষ। ঘুমের মধ্যে তার সবচে পছন্দের কাজ হচ্ছে আমার আর পাপার গলার উপরে হাত রাখা। এই হাতের ওজন কোনো মানুষের হাতের ওজন হতে পারে না। আমার নিজের সাথেও এমন অনেক বার হইসে যে শ্বাস নিতে না পেরে ঘুম ভেঙে গেসে। গলা থেকে মার হাত সরানোটাও খুবই কঠিন হয়,এত ভারী হাত।নরমালি ঘুমের মধ্যে মানুষ শক্তি খাটায় না। কিন্তু মার হাত সরাতে ঘাম ছুটে যায়। মার ঘুম ভেঙে গেলেই আবার হাত নরমাল লাগে।
পাপাও এমনটা ফেস করে অনেক।
মা এখন জিনিসগুলোর সাথে ইউজড টু। সে খুব স্বাভাবিক ভাবেই বলে "পিচ্চি দুইটারে যে কেন সব সময় ন্যাড়া করে রাখে বদ জীনটা"
-----
আমার কোনো ভাই বোন নাই। মা কনসিভ করার পরপরই মিসকারেজ হয়ে যেতো। আমি পেটে আসি রমজান মাসে।আমি পেটে আসার পর থেকে একটা ওয়াক্ত বাকি ছিল না যখন আমাদের বাসায় কেউ কোরআন পড়ে নি। তবুও আমার জন্ম হওয়াটা সোজা ছিল না। যাই হোক। আমি যখন ক্লাস থ্রি তে পড়ি সবাই বলতে শুরু করল "তুমি ভাই নিবা না বোন? তোমার মার একটা বাবু হবে এইবার! " আমি মোটেও খুশি ছিলাম না। একদিন খুব বৃষ্টি হচ্ছিলো। আমি স্কুলে যাই নি। মার বিছানায় বসে পাপার সাথে খেলছি । মা মাত্র গোসল করে আসছে, ক্লাস নিতে যাবে। মা ড্রেসিন টেবিলের টুলটা টেনে আয়নার সামনে বসতে গেলো,(আমি তখন হা করে মার দিকে তাকায় আছি। এত সুন্দর! ) হঠাৎ আমার চোখের সামনে টুলটা আস্তে করে সরে গেলো আর মা মেঝেতে পরে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলো। রক্ত দেখে আমি সেন্সলেস হয়ে গেলাম। যখন জ্ঞান ফিরল তখন মা হস্পিটালে। আমি এখনও চোখের সামনে স্পষ্ট দেখি কিভাবে ড্রেসিন টেবিলের টুলটা সেদিন সরে গেছিলো একা একা। এখনও আমার অদ্ভুত লাগে অই দৃশ্যটা।
--
আমি অনেক সাহসী। ভয় তেমন পাই না। শুধু একলা থাকলে ঘুমাতে পারি না রাতে। ভোর হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। কেন ভয় পাই জানি না। শুধু জানি অন্ধকারে একা ঘরে চোখ বন্ধ করলে কিছু একটা হয়। কেউ আমাকে ঘুমাতে দেয় না।